ঐতিহাসিক

বাংলার ঐতিহাসিক মসজিদ সমুহ

September 22, 2021
10 most historical mosques in Bangladesh

মুসলমানদের একটি গুরুত্বপুর্ন প্রতিস্টান হলো মসজিদ।যেখানেই মসলিম আছে সেখানে মসজিদ আছে। বাংলাদেশের জনসংখ্যার প্রায় ৯৬% হলো মুসলমান তাই বাংলাদেশের প্রয় সব জায়গায় মসজিদ দেখা যায়।আজ আমরা বাংলার ঐতিহাসিক ১০টি মসজিদ দেখাব।

বায়তুল মুকাররম মসজিদঃ

এটি বাংলাদেশের জাতীয় মসজিদ। মসজিদটি রাজধানী ঢাকার প্রাণকেন্দ্র পল্টনে অবস্থিত। ১৯৬০ সালে নির্মান কাজ শুরু হয় এবং ১৯৬৮ সালে মসজিদটির নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়। এর স্থাপত্যশৈলী অত্যন্ত দৃষ্টিনন্দন। এ মসজিদে একসাথে ৩০,০০০ মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারে, ফলে ধারণক্ষমতার দিক দিয়ে এটি বিশ্বের ১০ম বৃহত্তম মসজিদ। তবে মসজিদটিতে জুমার নামাজ ছাড়াও বিশেষত রমজানের সময় অত্যধিক মুসল্লির সমাগম হয় বিধায়, বাংলাদেশ সরকার মসজিদের ধারণক্ষমতা ৪০ হাজারে উন্নিত করে।এর ২৬৯৪.১৯ বর্গ মিটার।Baitul Mukarram Mosque

খান মোহাম্মদ মির্জা মসজিদঃ


ঢাকাকে মসজিদের নগরি বলা হয় কারন ঢাকার অলিতে গিলিতে রয়েছে অসংখ্য মসজিদ তেমনি একটি প্রাচিন ওইতিহাসিক মসজিদ হলো খান মোহাম্মদ মির্জা মসজিদ। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা শহরের পুরানো ঢাকা এলাকার আতশখানায় অবস্থিত একটি প্রাচীন মসজিদ। এটি ১৭০৬ খ্রিস্টাব্দে নায়েবে নাযিম ফররুখশিয়ারের শাসনামলে নির্মিত হয়।বর্তমানে বাংলাদেশ সরকারের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ এই মসজিদের রক্ষণাবেক্ষণ করে থাকে।Khan Muhammad Mirza Mosque

ষাট গুম্বুজ মসজিদঃ


বাংলাদেশের বাগেরহাট জেলার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত একটি প্রাচীন মসজিদ। মসজিদটির গায়ে কোনো শিলালিপি নেই। তাই এটি কে নির্মাণ করেছিলেন বা কোন সময়ে নির্মাণ করা হয়েছিল সে সম্বন্ধে সঠিক কোনো তথ্য পাওয়া যায় না। তবে মসজিদটির স্থাপত্যশৈলী দেখলে এটি যে খান জাহান আলী নির্মাণ করেছিলেন সে সম্বন্ধে কোনো সন্দেহ থাকে না। ধারণা করা হয় তিনি ১৫শ শতাব্দীতে এটি নির্মাণ করেন। মসজিদটি উত্তর-দক্ষিণে বাইরের দিকে প্রায় ১৬০ ফুট ও ভিতরের দিকে প্রায় ১৪৩ ফুট লম্বা এবং পূর্ব-পশ্চিমে বাইরের দিকে প্রায় ১০৪ ফুট ও ভিতরের দিকে প্রায় ৮৮ ফুট চওড়া। দেয়ালগুলো প্রায় ৮•৫ ফুট পুরু। ষাট গম্বুজ মসজিদে গম্বুজের সংখ্যা মোট ৮১ টি, সাত লাইনে ১১ টি করে ৭৭ টি এবং চার কোনায় ৪ টি মোট ৮১ টি। কালের বিবর্তনে লোকমুখে ৬০ গম্বুজ বলতে বলতে ষাট গম্বুজ নামকরণ হয়ে যায়, সেই থেকে ষাট গম্বুজ নামে পরিচিত।Sixty Domes Mosque

কুসুম্বা মসজিদঃ

বাংলাদেশের নওগাঁ জেলার মান্দা উপজেলার কুসুম্বা গ্রামের একটি প্রাচীন ঐতিহাসিক মসজিদ। কুসুম্বা দিঘির পশ্চিম পাড়ে, পাথরের তৈরি ধূসর বর্ণের মসজিদটি অবস্থিত।আত্রাই নদীর পশ্চিম তীরে, বাংলাদেশের নওগাঁ জেলার মান্দা উপজেলা থেকে ৪ মাইল উত্তর-পশ্চিমে মান্দা-নওগাঁ সড়কের পশ্চিম পার্শ্বে এ মসজিদটি অবস্থিত।মসজিদটি দৈর্ঘ্যে ৫৮ফুট, প্রস্থে ৪২ফুট। দুই সারিতে ৬টি গোলাকার গম্বুজ ও ৪টি মিনার রয়েছে। মসজিদের গায়ে রয়েছে লতাপাতার নকশা।গিয়াসউদ্দিন বাহাদুর শাহের আমলে সুলায়মান নামে একজন এই মসজিদটি ১৫৫৮-১৫৬৯খ্রিষ্টাব্দ নির্মাণ করেছিলেন।Kusumba Mosque

ছোট সোনা মসজিদ:


বাংলাদেশের অন্যতম প্রাচীন ঐতিহাসিক মসজিদ। প্রাচীন বাংলার রাজধানী গৌড় নগরীর উপকণ্ঠে পিরোজপুর গ্রামে এ স্থাপনাটি নির্মিত হয়েছিল, যা বর্তমানে বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগের চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ থানার অধীনে পড়েছে। সুলতান আলাউদ্দিন হুসেন শাহ এর শাসনামলে (১৪৯৪-১৫১৯ খ্রিষ্টাব্দে) ওয়ালি মোহাম্মদ নামে এক ব্যক্তি এই মসজিদ নির্মাণ করেছিলেন। দৈর্ঘ্য ৮২ ফুট প্রস্থ ৫২.৫ ফুট গম্বুজসমূহ ১৫Chhoto Sona Mosque

রাজবিবি মসজিদঃ

এই মসজিদটি রাজশাহী বিভাগের চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত একটি ঐতিহাসিক মসজিদ। চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে প্রায় ৩৫ কি.মি.।এই মসজিদের আয়তন ৬২ × ৪২ ফুট।ঘুম্বুজের সংখ্যা ৪টি। ধারণা করা হয় ১৪৮০ খ্রিষ্টাব্দে কোন এক রাজবিবি মসজিদটি নির্মাণ করেন। মসজিদটি দেখতে প্রায় মালদার চামকাটি মসজিদের মত।। এটি স্থানীয়ভাবে চামচিকা মসজিদ এবং রাজবিবি মসজিদ নামেও পরিচিত।Rajbibi Mosque

বিনত বিবির মসজিদ:

বাংলাদেশের ঢাকা শহরের পুরানো ঢাকা এলাকায় অবস্থিত একটি মধ্যযুগীয় মসজিদ। নারিন্দা পুলের উত্তর দিকে অবস্থিত এই মসজিদটির গায়ে উৎকীর্ণ শিলালিপি অনুসারে ৮৬১ হিজরি সালে, অর্থাৎ ১৪৫৭ খ্রিষ্টাব্দে সুলতান নাসিরুদ্দিন মাহমুদ শাহের শাসনামলে তার কন্যা মুসাম্মাত বখত বিনত বিবি এটি নির্মাণ করান।Binat Bibi Msque

দারাসবাড়ি মসজিদ:

এর অবস্থান চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার ছোট সোনা মসজিদের সন্নিকটে। মসজিদটির অবস্থান ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে। সোনামসজিদ স্থল বন্দর থেকে মহানন্দা নদীর পাড় ঘেঁষে প্রায় ৩ কিলোমিটার দূরে বাংলাদেশ রাইফেলস-এর সীমান্ত তল্লাশী ঘাঁটি; এই ঘাটিঁর অদূরে অবস্থিত দখল দরওয়াজা। দখল দরওয়াজা থেকে প্রায় এক কি্লোমিটার হেঁটে আমবাগানের মধ্য দিয়ে অগ্রসর হয়ে একটি দিঘী পার হয়ে দক্ষিণ পশ্চিমে ঘোষপুর মৌজায় দারাসবাড়ি মসজিদ ও দারাসবাড়ি মাদ্রাসা অবস্থিত। এটি ছোট সোনা মসজিদের চেয়েও বড়।
ইট নির্মিত এই মসজিদের অভ্যন্তরের আয়তক্ষেত্র দুই অংশে বিভক্ত। এর আয়তন ৯৯ ফুট ৫ ইঞ্চি, ৩৪ ফুট ৯ ইঞ্চি। পূর্ব পার্শ্বে একটি বারান্দা, যা ১০ ফুট ৭ ইঞ্চি। বারান্দার খিলানে ৭টি প্রস্ত্তর স্তম্ভের উপরের ৬টি ক্ষুদ্রাকৃতি গম্বুজ এবং মধ্যবর্তীটি অপেক্ষাকৃত বড় ছিল। উপরে ৯টি গম্বুজের চিহ্নাবশেষ রয়েছে উত্তর দক্ষিণে ৩টি করে জানালা ছিল। উত্তর পশ্চিম কোণে মহিলাদের নামাজের জন্য প্রস্তরস্তম্ভের উপরে একটি ছাদ ছিল। এর পরিচয় স্বরূপ এখনও একটি মেহরাব রয়েছে। এতদ্ব্যতীত পশ্চিম দেয়ালে পাশাপাশি ৩টি করে ৯টি কারুকার্য খচিত মেহরাব বর্তমান রয়েছে।Darasbari Mosqu

তারা মসজিদ:

পুরান ঢাকার আরমানিটোলায় আবুল খয়রাত সড়কে অবস্থিত। সাদা মার্বেলের গম্বুজের ওপর নীলরঙা তারায় খচিত এ মসজিদ নির্মিত হয় আঠারো শতকের প্রথম দিকে।এর দৈর্ঘ ২১.৩৪ মিটার এবং প্রস্থ ৭.৯৮ মিটার। ই সুন্দর মসজিদটির ৫টি গম্বুজ ও ৪টি মিনার রয়েছে। দৈর্ঘ্য ২১.৩৪ মিটার প্রস্থ ৭.৯৮ মিটার গম্বুজসমূহ ৫ মিনারসমূহ ৪Star Mosque

বাঘা মসজিদ:

রাজশাহী জেলা সদর হতে প্রায় ৪১ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে বাঘা উপজেলায় অবস্থিত একটি বাংলার ঐতিহাসিক মসজিদ। সুলতান নাসিরউদ্দিন নুসরাত শাহ ১৫২৩ খ্রিষ্টাব্দে মসজিদটি প্রতিষ্ঠা করেন।
আয়তন ২৩.১৬ × ১২.৮০ বর্গ মিটার গম্বুজ ১০টিBagha Mosqu

বাংলার ঐতিহাসিক ১০ টি মসজিদের ভিডিও

You Might Also Like

3 Comments

  • Reply ভ্রমণ কেন প্রয়োজন - Tour Sylhet Bd September 25, 2021 at 3:15 am

    […] না রাখা ভ্রমনের জন্য । ভ্রমণ হতে পারে ঐতিহাসিক স্থান ভ্রমণ, ধর্মিয় স্থান ভ্রমণ বা প্রাকৃতিক […]

  • Reply ভ্রমনের পুর্বে যে বিষয়গুলো জেনে রাখা ভালো - Tour Sylhet Bd September 25, 2021 at 3:45 am

    […] হতে পারে ঐতিহাসিক স্থান ভ্রমণ, ধর্মিয় স্থান ভ্রমণ বা প্রাকৃতিক […]

  • Reply পর্যটন শিল্পের উন্নয়নে ডিজিটাল মার্কেটিং এর গুরুত্ত্ব - Tour Sylhet Bd September 28, 2021 at 4:31 am

    […] নিদর্শন, ঐতিহাসিক স্থান, ঐতিহাসিক মসজিদ এবং মিনার, পৃথিবীর দীর্ঘতম প্রাকৃতিক সমুদ্র […]

  • Leave a Reply