ডিজিটাল মার্কেটিং প্রথাগত মার্কেটিং এর তুলনায় অনেক বেশি ফলপ্রসূ ও সাশ্রয়ী।তাছাড়া বর্তমান ব্যাবসায়- বাণিজ্য যতটা না সামাজিক তার চেয়ে বেশী ডিজিটাল।তাই মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে ডিজিটাল মার্কেটিং অত্যন্ত প্রতিক্রিয়াপ্রবণ হিসেবে মর্যাদা পাচ্ছে। একটি ট্রেন্ডি পেশা ও যেকোনো দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নের হাতিয়ার হিসেবে ডিজিটাল মার্কেটিং অত্যাধিক গুরুত্বপূর্ণ।
পর্যটন (ইংরেজি: Tourism) এক ধরনের বিনোদন, অবসর অথবা ব্যবসায়ের উদ্দেশ্যে এক স্থান থেকে অন্য স্থান কিংবা এক দেশ থেকে অন্য দেশে ভ্রমণ করাকে বুঝায়। ইতিমধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পর্যটন শিল্প হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। এছাড়াও, বিশ্বব্যাপী অবসরকালীন কর্মকাণ্ডের অন্যতম মাধ্যম হিসেবে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। যিনি আমোদ-প্রমোদ বা বিনোদনের উদ্দেশ্যে অন্যত্র ভ্রমণ করেন তিনি পর্যটক নামে পরিচিত।
এখন জেনে নেই ডিজিটাল মার্কেটিং আসলে কি?
ডিজিটাল মার্কেটিংঃ “ডিজিটাল মার্কেটিং” কথাটি দুটিশব্দের সমন্বয়ে গঠিত “ডিজিটাল” এবং “মার্কেটিং”।আসুন আগে দেখি এ শব্দ দুটি দ্বারা আমরা কি বুজি?
ডিজিটাল:-ডিজিটাল কথাটির অর্থ হচ্ছে সংখ্যাগত বা Digit সংক্রান্ত।শুধু বাইনারী সংখ্যাব্যবস্থার “0”এবং “1” এর দুনিয়াই হচ্ছে ডিজিটাল দুনিয়া।”0″এবং “1” বা বাইনারী হচ্ছে কম্পিউটার প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ তাই “0”এবং “1”দুনিয়া হচ্ছে কম্পিউটারের দুনিয়া। আর “0”এবং “1” এই ডিজিটের ঘাঁড়ে ভর করেই এসব সম্ভব হয় বলেই,আমরা এই বিস্ফোরিত প্রযুক্তিগত পরিবেশকে ডিজিটাল বলি।
মার্কেটিং”কাকে বলে?
এই প্রশ্নটির উত্তর সবাই গুছিয়ে বলতে না পারলে ও মার্কেটিং যে কী,তা আমরা মোটামুটি সবাই বুঝি। সাধারণের মুখের ভাষায় বলতে গেলে বিক্রির ধান্দা।সুতরাং, “ডিজিটাল” হচ্ছে আধুনিক স্বয়ংক্রিয় প্রযুক্তিগত পরিবেশ আর “মার্কেটিং”হচ্ছে ক্রেতা ভ্যালু সৃষ্টি এবং লক্ষ্যাস্থিত গ্রাহকদের কাছে তা পৌঁছে দেওয়ার মাধ্যমে প্রাতিষ্ঠানিক মুনাফা অর্জন প্রক্রিয়া।
ডিজিটাল মার্কেটিং হচ্ছে প্রথাগত মার্কেটিং, যেমন-টিভি,নিউজপেপার, বিজ্ঞাপন, বিলবোর্ড,অফার,কুপন,মূল্যছাড় ইত্যাদির বাইরে ইন্টারনেট, কম্পিউটার ও তৎ সংশ্লিষ্ট প্রযুক্তি ব্যবহার মাধ্যমে মার্কেটিং প্রক্রিয়া।তাই বলা যায় যে, ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করার মাধ্যমে পন্য ও সেবার বিজ্ঞাপন ও প্রচার করা হচ্ছে ডিজিটাল মার্কেটিং। বিভিন্ন ধরনের ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস যেমন মোবাইল, কাম্পউটার, ল্যাপটপের মাধ্যমে ইনটারনেট ব্যবহার করে সার্চ ইন্জিন, ওয়েবসাইট, ইমেইল, ও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম মোবাইল এ্যাপস ইত্যাদি ব্যবহার করে পন্য বা সেবা সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্য ক্রেতা বা ভোক্তার নিকট উপস্থাপন করা হচ্ছে ডিজিটাল মার্কেটিং। এছাড়াও ডিজিটাল বিলবোর্ড বা টেলিভিশন পন্য ও সেবা প্রচার করাই হচ্ছে ডিজিটাল মার্কেটিং।ডিজিটাল মার্কেটিংকে আবার ইন্টারনেট মার্কেটিং বা অনলাইন মার্কেটিং ও বলা হয়।
এখন চলুন দেখি কি কি বিষয় আছে ডিজিটাল মার্কেটিং এঃ
১.সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাউজেশন (SEO) ২. ভিডিও মার্কেটিং ৩. সোশিয়াল মিডিয়া মার্কেটিং ৪. ইউটিউব মার্কেটিং৫. ইমেইল মার্কেটিং ৬. এফিলিয়েট মার্কেটিং ৭.সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং (SEM) ৮.ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং ৯.কন্টেন্ট মার্কেটিং ১১.কন্টেন্ট অটোমেশন ১০.ক্যাম্পেইন মার্কেটিং ১১.সোশ্যাল মিডিয়া অপটিমাইজেশন ১২.ই-কমার্স মার্কেটিং এই বিষয় গুলোর সমন্বয়ে ডিজিটাল মার্কেটিং।
পর্যটন শিল্পের অর্থনৈতিক উপযোগিতা-
পর্যটন শিল্পের অর্থনৈতিক উপযোগিতা-২০১০ সালে ৯৪০ মিলিয়নেরও অধিক আন্তর্জাতিক পর্যটক বিশ্বব্যাপী ভ্রমণ করেন। ২০০৯ সালের তুলনায় এ সংখ্যা ৬.৬% বেশি ছিল। ২০১০ সালে আন্তর্জাতিক পর্যটনে ৯১৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বা ৬৯৩ বিলিয়ন ইউরো।বিশ্বের অনেক দেশে পর্যটন খাত অর্থনৈতিক উন্নয়নে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তন্মধ্যে – ফ্রান্স, মিশর, গ্রীস, লেবানন, ইসরায়েল, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, স্পেন, ইতালি, থাইল্যান্ড অন্যতম। এছাড়াও দ্বীপ রাষ্ট্র হিসেবে খ্যাত মৌরীতাস, বাহামা, ফিজি, মালদ্বীপ,ফিলিপাইন, সিসিলিতেও পর্যটন শিল্প ব্যাপক বিকাশ লাভ করেছে। পর্যটনের মাধ্যমে ব্যাপক পরিমাণের অর্থ মালামাল পরিবহন এবং সেবা খাতে ব্যয়িত হয় যা বিশ্বের মোট জাতীয় উৎপাদনের প্রায় ৫%। অর্থনীতির সহায়ক সেবা খাত হিসেবে পর্যটনের সাথে জড়িত রয়েছে ব্যাপকসংখ্যক লোক। এরফলে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। সেবা খাত বা শিল্পের মধ্যে রয়েছে পরিবহন ব্যবস্থা যাতে বিমান, প্রমোদ তরী, ট্যাক্সিক্যাব; আতিথেয়তা সেবায় থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা যাতে হোটেল, রিসোর্ট; এবং আমোদ-বিনোদনের মধ্যে চিত্তবিনোদন পার্ক, ক্যাসিনো,শপিংমল, সঙ্গীত মঞ্চ ও থিয়েটার অন্যতম।
বাংলাদেশে পরিচিত- অপরিচিত অনেক পর্যটক-আকর্ষক স্থান আছে। বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে যুগে যুগে ভ্রমণকারীরা মুগ্ধ হয়েছেন। এর মধ্যে প্রত্মতাত্বিক নিদর্শন, ঐতিহাসিক স্থান, ঐতিহাসিক মসজিদ এবং মিনার, পৃথিবীর দীর্ঘতম প্রাকৃতিক সমুদ্র সৈকত, পাহাড়, অরণ্য ইত্যাদি অন্যতম। এদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য পর্যটকদের মুগ্ধ করে। বাংলাদেশের প্রত্যেকটি এলাকা বিভিন্ন স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যে বিশেষায়িত । বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত হচ্ছে বাংলাদেশের কক্সবাজার।
বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পের সমস্যাসমূহ
বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পের সমস্যাসমূহ-বাংলাদেশের যোগাযোগ ও অবকাঠামোগত অসুবিধা ছাড়াও, তথ্যের অপ্রতুলতা ও চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং নিরাপত্তা নিয়ে পর্যটকরা উদ্বিগ্ন থাকেন। এছাড়া পর্যটন শিল্পের প্রচার এবং প্রসারের জন্য সরকারি-বেসরকারি উভয়ের উদ্যোগের অভাব রয়েছে। বিভিন্ন পর্যটন স্পটে পর্যটকরা ছিনতাইসহ নানা রকমের নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন। বিশেষত নারী ও বিদেশি পর্যটকরা বেশি সমস্যায় পড়েন। দিনের বেলায় ফেরিওয়ালাদের উৎপাত ছাড়াও পর্যটন স্পটে জিনিসপত্রের অগ্নিমূল্যের কারণে পর্যটকেরা অনুৎসাহিত হন।
ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যমে বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পের সম্ভাবনা
ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যমে বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পের সম্ভাবনা-বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে যুগে যুগে ভ্রমণকারীরা মুগ্ধ হয়েছেন। স্বাভাবিকভাবে এ সৌন্দর্যের লীলাভূমি বাংলাদেশে পর্যটন শিল্প উন্নয়নের সম্ভাবনা অপরিসীম। নতুন করে কৌশল ঠিক করে সম্ভাবনার সবটুকুকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে পর্যটনে মডেল হতে পারে। তুলনামূলকভাবে বাংলাদেশ স্বল্প আয়তনের দেশ হলেও বিদ্যমান পর্যটক আকর্ষণে যে বৈচিত্র্য তা সহজেই পর্যটকদের আকর্ষণ করতে পারে।
পৃথিবীতে পর্যটন শিল্প আজ বৃহত্তম শিল্প হিসেবে স্বীকৃত। পর্যটন শিল্পের বিকাশের ওপর বাংলাদেশের অনেকখানি সামগ্রিক উন্নয়ন নির্ভর করছে। দেশে পর্যটন শিল্পের বিকাশ ঘটলে কর্মসংস্থান ঘটবে ও বেকারত্ব দূরীকরণের মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচন সফল হবে। ভিন্ন ভিন্ন দেশের প্রাচীন যুগের ইতিহাস ও শিল্প, সাহিত্য, কালচার ও প্রথার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ঐতিহাসিক স্থান দেখার জন্যও পর্যটকরা নিজ দেশের সীমানা পেরিয়ে দূর-দূরান্তে ছুটে চলে প্রতিনিয়ত। পর্যটন হলো একটি বহুমাত্রিক শ্রমঘন শিল্প। এ শিল্পের বহুমাত্রিকতার কারণে বিভিন্ন পর্যায়ে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের সম্ভাবনা তৈরি হয়। ফলে ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। সরকারি অনুদান ও সংশ্লিষ্ট বিভাগের সঙ্গে যথাযথ সমন্বয় সাধন করার পাশাপাশি উন্নত অবকাঠামো, সঠিক পরিকল্পনা ও রাজনৈতিক স্থিতিশীল অবস্থা দরকার পর্যটনের জন্য।
পর্যটন শিল্পের উপাদান ও ক্ষেত্রগুলো দেশে ও বিদেশে আকর্ষণীয়ভাবে ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যমে পর্যটন শিল্পের অধিকতর বিকাশ ঘটানো সম্ভব।কারন ডিজিটাল মার্কেটিং প্রথাগত মার্কেটিং এর তুলনায় অনেক বেশি ফলপ্রসূ ও সাশ্রয়ী।তাছাড়া বর্তমান ব্যাবসায়- বাণিজ্য যতটা না সামাজিক তার চেয়ে বেশী ডিজিটাল।তাই মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে ডিজিটাল মার্কেটিং অত্যন্ত প্রতিক্রিয়াপ্রবণ হিসেবে মর্যাদা পাচ্ছে। ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যমে প্রাচীন যুগের ইতিহাস ও শিল্প, সাহিত্য, কালচার ও প্রথার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ঐতিহাসিক স্থান সহজ ভাবে উপস্থাপন করে পর্যটকদের আকৃস্ট করা যায়।তাই পর্যটন শিল্পের উন্নয়নে ডিজিটাল মার্কেটিং এর গুরুত্ত্ব অপরিসীম।
No Comments